ওয়ার্ডপ্রেস এসইও | WordPress SEO শিখে নিন

ওয়ার্ডপ্রেস এসইও গাইড

ওয়েবসাইটে আরও ট্র্যাফিক পাওয়ার জন্য আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এসইও উন্নত করা গুরুত্বপূর্ণ। দূর্ভাগ্যক্রমে বেশিরভাগ ওয়ার্ডপ্রেস এসইও নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক বেশি টেকনিক্যাল এবং কিছুটা জটিল বলে মনে হয়। আপনি যদি নিজের ওয়েবসাইটের ট্র্যাফিক বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিতে চান, তবে আপনাকে সেরা ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্রাকটিসের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

এই টিউটোরিয়ালে আমরা আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এসইও উন্নত করতে এবং আরও অর্গানিক ট্র্যাফিক পেতে সহায়তা করার জন্য টপ ওয়ার্ডপ্রেস এসইও টিপসগুলো শেয়ার করবো।

আপনি নিশ্চয়ই এক্সপার্টদের কাছে শুনে থাকবেন যে ওয়ার্ডপ্রেস এসইও ফ্রেন্ডলি। এজন্যই বেশিরভাগ লোক একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট শুরু করার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস পছন্দ করেন।

যদিও ওয়ার্ডপ্রেস কোড বাই ডিফল্ট এসইও ফ্রেন্ডলি, কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগিং করার সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে হলে আপনাকেও অনেক কিছু করতে হবে।

ওয়ার্ডপ্রেস এসইও যথাযথভাবে অপটিমাইজ করার জন্য আমাদের বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হবে।

একনজরে সম্পূর্ণ আর্টিকেল

ওয়ার্ডপ্রেস এসইও গাইড | WordPress SEO Guide

আমরা জানি ওয়ার্ডপ্রেস এসইও আপনার জন্য অনেক কঠিন হতে পারে, যদি না আপনি টেকনোলজি বিষয়ে খুব বেশি ধারণা রাখেন। এতটাও চিন্তা করার দরকার নেই, কারণ আপনি প্রতিবর্তন পরিবারের সম্মানিত পাঠক।

আমরা এখানে ব্যসিক এসইওগুলো সম্পর্কে সহজ করে তুলে ধরবো এবং তারপরে আপনি এগুলো নিজের ওয়েবসাইটে প্রয়োগ করতে শুরু করবেন।

এসইও কি?

SEO একটি ইংরেজি শব্দ যার পূর্ণরূপ Search Engine Optimization (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান)। সহজ ভাষায় এটি সার্চ ইঞ্জিনগুলিতে উচ্চতর Rank করে আরও বেশি ট্রাফিক পেতে ওয়েবসাইট মালিকদের দ্বারা ব্যবহৃত একটি কৌশল।

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন মানে গুগলের সাথে ট্রিক করা নয়। এটি কেবলমাত্র এমন ফর্ম্যাটিং যা সার্চ ইঞ্জিন ওয়েবসাইটগুলোকে আপনার ওয়েবসাইট এবং কনটেন্টকে পড়তে এবং বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝতে সুবিধা করে দেয়।

যখন কোনো পাঠক গুগলে সেই টপিক নিয়ে সার্চ করবে যেটি আপনি এসইও করে লিখেছেন তখন গুগল আপনার লেখাকে ভালো পজিশন দিয়ে সার্চ রেজাল্ট দেখাবে এবং আপনি আরও বেশি ভিজিটরস ওয়েবসাইটে নিয়ে আসতে পারবেন।

এসইও কেন গুরুত্বপূর্ণ?

সার্চ ইঞ্জিনগুলো বেশিরভাগ ওয়েবসাইটের ট্রাফিকের বৃহত্তম উৎস। গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলো অনুসন্ধানকারীদের কাছে যথার্থ তথ্য দেখানোর জন্য উন্নত অ্যালগরিদম ব্যবহার করে। তবে সেই অ্যালগরিদমগুলো নিখুঁত নয়, কনটেন্ট সম্পর্কে বোঝার জন্য তাদের এখনও আপনার সহায়তা প্রয়োজন।

যদি আপনার বিষয়বস্তু অপ্টিমাইজ করা না হয়, তবে অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলি টপিক সম্পর্কে না বুঝতে পারায় কোথায় Rank করাবে এটি নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দে পরে যাবে।

লোকেরা যখন আপনার লেখার বিষয় নিয়ে সার্চ করবে তখন আপনার কনটেন্ট বা ওয়েবসাইট অনুসন্ধান ফলাফলগুলোতে প্রদর্শিত হবে না এবং আপনি সমস্ত ট্রাফিক মিস করবেন।

সার্চ ইঞ্জিন থেকে সর্বাধিক ট্রাফিক পাওয়ার জন্য সমস্ত ব্লগ এবং অনলাইন বিজনেস মালিকদের জন্য তাদের ওয়েবসাইটকে এসইও ফ্রেন্ডলি করা সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যসিক ওয়ার্ডপ্রেস এসইও | Basic WordPress SEO

এসইও প্রযুক্তিগত ব্যাপার মনে হতে পারে, এবং আসলেই তাই। তবে ওয়ার্ডপ্রেসে এসইও করার জন্য আপনাকে প্রযুক্তবিদ হওয়ার দরকার নেই।

আপনার সাইট অপ্টিমাইজেশন করার জন্য কয়েকটি প্রাথমিক এসইও টিপস শিখে নিলেই আপনার ওয়েবসাইট ট্র্যাফিকের লক্ষণীয় উন্নতি দেখতে পারবেন।

আপনি যদি ইতিমধ্যে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা শুরু করে থাকেন তবে যা প্রয়োজন তা আপনার আছে। সুতরাং, চলুন আপনার ওয়েবসাইটটি এসইও করা শুরু করি।

1. সার্চ ইঞ্জিন Visibility Settings চেক করা

ওয়ার্ডপ্রেসে সার্চ ইঞ্জিনগুলো থেকে ওয়েবসাইটকে সরিয়ে নিতে একটি অন্তর্নির্মিত বিকল্প আছে। এই বিকল্পটির উদ্দেশ্য হলো প্রস্তুত হওয়ার আগে আপনার ওয়েবসাইটে কাজ করার জন্য সময় দেওয়া, এবং জনসাধারণের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা।

কিন্তু, কখনও কখনও এই বিকল্পটি দূর্ঘটনাক্রমে অন হয়ে যেতে পারে এবং এটি সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে আপনার ওয়েবসাইটকে অনুপস্থিত করে দেয়।

যদি আপনার ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্টে উপস্থিত না হয়, তবে প্রথমে আপনাকে যা করতে হবে তা হলো এই অপশনটি চালু করা হয়নি তা নিশ্চিত করা।

আপনার সাইটের ওয়ার্ডপ্রেস এডমিন লগইন করুন এবং এরপর Settings » Reading এ ক্লিক করুন।

আরো পড়ুন:  বাংলায় গেস্ট ব্লগ পোস্ট করার জনপ্রিয় ৫টি ব্লগ সাইট

আপনাকে ‘Search Engine Visibility’ পর্যন্ত স্ক্রল করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে ‘অনুসন্ধান ইঞ্জিনকে এই সাইটকে ইনডেক্স করতে নিরুৎসাহিত করার হয়নি।

আপনার পরিবর্তনটি সংরক্ষন করতে Save বাটনে ক্লিক করতে ভুলবেন না।

2. এসইও ফ্রেন্ডলি URL Structures ব্যবহার

SEO friendly URL এ এমন শব্দ থাকে যা পেজের বিষয়বস্তুকে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করে এবং এটি মানুষ ও অনুসন্ধান ইঞ্জিন উভয়ই সহজে পড়তে ও বুঝতে পারে।

এসইও বান্ধব URL এর উদাহরণ হ’ল:

https://www.pratiborton.com/আর্টিকেল-লেখার-নিয়ম 
অন পেজ এসইও কি, এসইও কেন গুরুত্বপূর্ণ? SEO করার নিয়ম

লক্ষ্য করুন যে এই ইউআরএলগুলি পঠনযোগ্য এবং আপনি কেবল URL টি দেখেই পেজে কী আছে, তা অনুমান করতে পারছেন।

তাহলে একটি নন-এসইও ফ্রেন্ডলি URL দেখতে কেমন?

https://www.pratiborton.com/?p=10467
https://pratiborton.com/archives/123

এই নম্বর ব্যবহার করা ইউআরএলগুলো বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কিত নয় এবং কোনও ব্যবহারকারীই ইউআরএল দেখে পৃষ্ঠায় কী আছে তা অনুমান করতে পারবে না।

এসইও বান্ধব পারমালিংক স্ট্রাকচার ব্যবহার সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টে আরও ভাল অবস্থান পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।

কীভাবে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের পারমালিংক কাঠামোটি আপডেট করবেন তা দেখে নিন।

আপনাকে Settings » Permalinks pageটিতে যেতে হবে। Post name অপশনটি নির্বাচন করুন এবং save বাটনে ক্লিক করুন।

এসইও ফ্রেন্ডলি URL

বি.দ্র! যদি আপনার ওয়েবসাইটটি 6 মাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে তবে Permalinks স্ট্রাকচারটি পরিবর্তন করবেন না। যদি Day and Name অথবা Month and Name ব্যবহার করে থাকেন তবে এভাবেই ব্যবহার করা চালিয়ে যান।

প্রতিষ্ঠিত সাইটে আপনার পারমালিংক কাঠামো পরিবর্তন করে আপনার সমস্ত সামাজিক মিডিয়া শেয়ার করা লিঙ্ক হারাবেন এবং আপনার বিদ্যমান এসইও Ranking হারানোর ঝুঁকিটিও থেকে যায়।

যদি আপনাকে অবশ্যই নিজের পারমলিংক কাঠামোটি পরিবর্তন করতে হয়, তবে একজন পেশাদার SEO expert নিয়োগ করুন, যাতে তারা proper redirects সেট-আপ করতে পারে। তাহলে, 404 error  আসবেনা, এসব লিঙ্ক থেকে আসা কোনো ট্রাফিকও লস করবেন না।

3. WWW vs non-WWW

আপনি যদি মাত্রই আপনার নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগ শুরু করে থাকেন, তবে আপনাকে নিজের ওয়েবসাইটের ইউআরএলটিতে www সহ (https://www.example.com) নাকি www ছাড়া (https://example.com) ব্যবহার করতে চান. তা ঠিক করে নিতে হবে।

সার্চ ইঞ্জিনগুলো এগুলোকে দুটো পৃথক ওয়েবসাইট হিসাবে বিবেচনা করে, সুতরাং এর অর্থ আপনাকে একটি বেছে নিতে হবে।

wp urlsআপনি Settings » General page এ গিয়ে আপনার পছন্দ সেট করতে পারবেন। ‘WordPress Address’ এবং ‘Site Address’ উভয়  স্থানেই আপনার পছন্দের একই URL যুক্ত করুন।

4. সেরা ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্লাগইন | Best WordPress SEO plugin

ওয়ার্ডপ্রেসের সবচেয়ে ভালো বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো এখানে সবকিছুর জন্য প্লাগইন পাওয়া যায়। অনপেজ এসইও এর ব্যতিক্রম নয়। হাজার হাজার ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্লাগইন রয়েছে যা নতুনদের জন্য সেরা ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্লাগইন বাছাই করা আরও কঠিন করে তোলে।

সেরা ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্লাগইনটি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে, আপনি সম্ভবত দুটি সর্বাধিক জনপ্রিয় প্লাগইন অল ইন ওয়ান এসইও (AIOSEO) বা ইয়োস্ট এসইও (Yoast SEO) নিয়ে দ্বিধায় পরতে পারেন। অনেকে অবশ্য RankMath কেও এই প্রতিযোগিতায় নিয়ে আসেন।

তাই AIOSEO বনাম Yoast SEO এর মধ্যে কোনটি ব্যবহার করবেন তা ঠিক করতে তুলনামূলক আলোচনাটি দেখে নিন।

5. Google Search Console এ সাইট যুক্ত করা

গুগল সার্চ কনসোল, যা ওয়েবমাস্টার টুলস নামেও পরিচিত। মূলত গুগলে ওয়েবসাইট এবং কনটেন্ট সাবমিট করার জন্য টুলসটি ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া গুগল আপনার সাইটকে কিভাবে পড়ছে, গুগলে সাইটের অবস্থানসহ বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিদিনের সার্চ রেজাল্টে আপনার কনটেন্ট পজিশন, অর্গানিক ট্রাফিকসহ আরো অনেক প্রতিবেদন এবং ডেটা সরবরাহ করে।

এই সকল তথ্য আপনার সাইটের উন্নতি এবং আরো ট্রাফিক পেতে কি করণীয় সে বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে। এছাড়া গুগল সার্চ কনসোল ইউআরএল পারফরম্যান্স দেখে ব্লগ আর্টিকেল আইডিয়াও পেয়ে যাবেন।

আপনার ওয়েবসাইটটিতে কোনও সমস্যা তৈরি হলে কিংবা কোনো এরোর আসলে আপনাকে সতর্ক করে দিবে, এবং সমাধান করার উপায়ও বলে দিবে।

6. ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের XML Sitemaps যোগ করা

একটি এক্সএমএল সাইটম্যাপ বিশেষভাবে ফর্ম্যাট করা ফাইল যা আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি পৃষ্ঠাকে সার্চ ইঞ্জিনে তালিকাভুক্ত করে। এটি সার্চ ইঞ্জিনগুলোর জন্য আপনার ব্লগের সমস্ত পেজ এবং কনটেন্ট সার্চ করা সহজ করে তোলে।

এক্সএমএল সাইটম্যাপ যুক্ত করার সাথে সাথে আপনার সাইটের সার্চ রেজাল্ট Rankingএ কোনও উন্নতি হবে না, তবে এটি সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে দ্রুত আপনার কনটেন্ট ইনডেক্স করাতে সহায়তা করবে।

যেকোনো এসইও প্লাগইন থেকে সহজেই আপনার সাইটের সাইটম্যাপটি কপি করে সার্চ কনসোলে যুক্ত করে দিতে পারবেন।

7. এসইও অপটিমাইজ আর্টিকেল লেখা

প্রায়শই নতুন ব্লগাররা এই ভেবে ভুল করে যে কোনো একটি ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্লাগইন ইনস্টল করলেই আমার কাজ শেষ, এসইও আপনা-আপনি  হতে থাকবে।

আসলে কিন্তু সেরকম কোনো ব্যপার নয়। এসইও একটি চলমান প্রক্রিয়া যার সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে হলে অবশ্যই অন পেজ অপটিমাইজেশন চালিয়ে যেতে হবে।

আরো পড়ুন:  অন পেজ এসইও কি, এসইও কেন গুরুত্বপূর্ণ? SEO করার নিয়ম

সকল ভালো SEO প্লাগইন আপনাকে প্রতিটি ব্লগ পোস্ট এবং পেজের টাইটেল, ডেটা ডেস্ক্রিপশন ও ফোকাস কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশ করতে দেয়। ভিজিটরস গুগলে সার্চ করে কিরূপ দেখবে তার preview দেখায়।

সর্বাধিক ক্লিক এবং অর্গানিক ট্রাফিক পেতে টাইটেল এবং মেটা ডেস্ক্রিপশন অপটিমাইজ করুন।

আপনি যদি ফোকাস কীওয়ার্ড এবং রিলেটেড কীওয়ার্ড কিভাবে বাছাই করতে হয় তা বুঝতে না পারেন তবে আর্টিকেল লেখার নিয়ম পড়ে নিন। আমি বলবো আপনি এটি অবশ্যই পড়ুন, কারণ এখানে একটি এসইও অপটিমাইজড আর্টিকেল লেখার পূর্ণাঙ্গ গাইড রয়েছে।

8. ওয়েবসাইটের জন্য কীওয়ার্ড রিসার্চ

কোন বিষয়গুলো সার্চ করা হয় এবং ব্লগ বা ওয়েবসাইটে কীওয়ার্ড হিসেবে কোনগুলো যুক্ত করা উচিত তা নির্ধারণ করার জন্য নতুন ব্লগারদের অনেকে নিজের অনুমানের উপর নির্ভর করে।

এটি অনেকটা অন্ধকারে তীর চালানোর মতো ব্যপার। লোকজন কী লিখে সার্চ করছে তা যখন টুলস ব্যবহার করে জানাই যায়, তখন অনুমান কেন?

কীওয়ার্ড রিসার্চ একটি গবেষণা কৌশল যা কন্টেন্ট লেখক এবং এসইও বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়। এটি আপনার সাইটের বিষয়বস্তু কী লিখে সার্চ করা হয় সেইসব শব্দ বা বাক্য সম্পর্কে জানতে করতে সহায়তা করে।

তারপরে আপনি আরও অর্গানিক ট্র্যাফিক পেতে আপনার ওয়েবসাইটগুলিতে এই শব্দ এবং বাক্যাংশগুলি ব্যবহার করতে পারেন।

আপনি ব্যবহার করতে পারেন এমন হাজারো কীওয়ার্ড রিসার্চ টুলস (বিনামূল্যে এবং পেইড) রয়েছে। আমরা SEMRush ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি, এটি আপনাকে বেস্ট কীওয়ার্ডগুলো খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারে।

একইসাথে সম্পূর্ণ ফ্রি Google Adword keyword Planner ব্যবহার করতে পারেন, বিশেষ করে যারা বাংলায় ব্লগিং করেন তাদের জন্য ফ্রিতে এটাই বেস্ট অপশন।

9. বেস্ট ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্রাকটিস

আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস এসইওর বেসিকগুলি অনুসরণ করেন এবং সেরা ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্লাগইন ব্যবহার করেন তবে আপনি ইতিমধ্যে বেশিরভাগ ওয়েবসাইটের চেয়ে এগিয়ে গেছেন।

তবে আপনি যদি আরও ভাল ফলাফল চান তবে আপনার নীচের wordpress SEO’র সেরা বিষয়গুলোও মেনে চলতে হবে।

এগুলো কোনো প্রযুক্তি সম্পর্কিত এসইও প্রাকটিস নয়। এগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য আপনার কোনোরকম কোডিং জানারও প্রয়োজন হবেনা। কিন্তু বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সক্ষমতা অবশ্যই রয়েছে।

10. সঠিকভাবে ক্যাটেগরি ও ট্যাগের ব্যবহার

ওয়ার্ডপ্রেস আপনাকে আপনার ব্লগ পোস্টগুলিকে ক্যাটেগরি এবং ট্যাগ এর মাধ্যমে sort করতে দেয়। ক্যাটেগরি এবং ট্যাগ ওয়েবসাইটের কনটেন্ট টপিক অনুসারে সাজাতে এবং পাঠকদের কনটেন্ট খুঁজে পেতে সুবিধা করে দেয়।

যথার্থ ট্যাগ এবং ক্যাটেগরি সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে আপনার ওয়েবসাইট টপিক এবং বিষয়বস্তু বুঝতে সুবিধা করে দেয়।

কিন্তু অধিকাংশ ব্লগাররা confused হয়ে যান এবং সঠিকভাবে ট্যাগ ও ক্যাটেগরি ব্যবহার করতে পারেননা। দেখে নিন কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস এসইওর জন্য categories এবং tags ব্যবহার করবেন।

এভাবে বলা যায় যে, একটি বই যদি ক্যাটেগরি হয় তবে এর সূচিপত্রগুলো হলো ট্যাগ।

উদাহরনস্বরূপ, ধরুন আপনার ব্লগটিতে খাবার, স্বাস্থ্য, অনলাইন ইনকাম বিষয়ক ক্যাটেগরি রয়েছে। তাহলে খাবার ক্যাটেগরির কোনো পোস্টের জন্য ট্যাগ হবে সালাদ, চিকেন, বিরিয়ানি, ইত্যাদি। অর্থাৎ আরো বেশি স্পেসিফিক কীওয়ার্ডস।

11. ইনবাউন্ড লিঙ্ক তৈরির অভ্যাস গড়ে তোলা

অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলি আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি পৃষ্ঠার জন্য একটি স্কোর (page authority) নির্ধারণ করে। এই স্কোরটি কিভাবে করা হয় তা গোপন রাখা হয় যাতে কেউ কোনো ট্রিকস করতে না পারে। কিন্তু page authority স্কোর দেওয়ার জন্য লিঙ্ককে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় ।

এজন্যই আপনার একটি ব্লগ পোস্টের সাথে অন্য পোস্ট এবং পেজগুলোর লিঙ্কআপ করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার নিজের পোস্টগুলোর মাঝে যখনই সম্ভব লিঙ্ক যুক্ত করার অভ্যাস করুন। আপনার যদি একাধিক লেখক থাকে তবে তাদেরকে বলে দিন যেন প্রতিটি পোস্টে কমপক্ষে ৩টি করে ইনবাউন্ড লিঙ্ক থাকে।

এই চর্চাটি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের এসইও স্কোর এবং পোস্টের অথরিটি বৃদ্ধি করবে। এছাড়া পাঠককে আপনার সাইটে আরো বেশি সময় ধরে রাখার অসাধারণ উপায়ও বটে।

12. কমেন্টস অপটিমাইজ করুন

আপনি কি অনেক কমেন্টস পাচ্ছেন? আপনাকে অভিনন্দন, আপনার ব্লগের সাথে ভিজিটরসদের এংগেজমেন্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অর্থ হলো আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এসইও স্কোর ভালো, আপনি অনেক ট্রাফিক পাচ্ছেন আর সেই সাথে আরো বেশি ব্যকলিঙ্ক।

তবে মন্তব্যগুলি ভ্যালিড এবং অবশ্যই স্প্যাম নয় তা নিশ্চিত করা দরকার। স্প্যামাররা খারাপ লিঙ্কগুলির সাথে মন্তব্য করে জমা দেয় যা আপনার সার্চ ইঞ্জিন Rank কে প্রভাবিত করতে পারে, এমনকি ধ্বংসও করতে পারে।

এজন্য আমরা সবাইকে Akismet প্লাগইন ব্যবহার করার পরামর্শ দেই। এটি প্রতিটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের সাথে প্রি-ইনস্টল হওয়া দুটি প্লাগইনের মধ্যে একটি। স্প্যামিং মন্তব্যের সাথে লড়াই করার জন্য কার্যকরী একটি সফটওয়্যার।

যাইহোক, কোনও পোস্টে অনেক বেশি মন্তব্য পেজ লোড স্লো করে ফেলে যা আপনার সার্চ ইঞ্জিন Rankকেও প্রভাবিত করে। এজন্য বেস্ট প্রাকটিস হলো কমেন্টসগুলো একাধিক পৃষ্ঠায় ভাগ করে দেওয়া।

আরো পড়ুন:  সেরা ৫টি ফ্রি অনলাইন এসইও কোর্স | Free SEO Courses

এজন্য Settings » Discussions এ গিয়ে Break comments থেকে ঠিক করে দিন প্রথম পেজে কতটি কমেন্ট দেখাতে চান।

13. NoFollow External Links in WordPress

উপরে উল্লিখিত তথ্য অনুসারে, লিঙ্কগুলো সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে কোন পৃষ্ঠাগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেই সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।

আপনি যখন অন্য কোনও ওয়েবসাইটের সাথে লিঙ্ক করেন, আপনি নিজের সাইটের কিছু এসইও স্কোর সেই লিঙ্কটিতে পাস করছেন। এই এসইও স্কোরকে “লিঙ্ক জুস” বলা হয়।

ভাল সার্চ Rank এর জন্য, আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনি যে পরিমাণ লিঙ্ক জুস দিচ্ছেন, তারচেয়ে বেশি লিঙ্ক জুস অন্য সাইট থেকে পাচ্ছেন।

এক্সটার্নাল লিঙ্কগুলোতে “nofollow” attribute যুক্ত করে দিলে অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলোকে সেই লিঙ্ককে অনুসরণ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। যা আপনার এসইও স্কোর অন্য কারো কাছে পাস হওয়া থেকে রক্ষা করে।

একটি সাধারণ আউটবাউন্ড লিঙ্কটির এইচটিএমএল দেখতে যেমন হয়:

<a href="http://example.com">Example Website</a>

“nofollow” attribute যুক্ত একটি আউটবাউন্ড লিঙ্ক দেখতে যেমন হয়:

<a href="http://example.com" rel="nofollow">Example Website</a>

ম্যানুয়ালি অথবা প্লাগইন ব্যবহার করে আউটবাউন্ড লিঙ্ক এর সাথে “nofollow” attribute যুক্ত করা যায়।

14. Full Posts vs Summaries or Excerpts

ওয়ার্ডপ্রেস হোম পেজ, ক্যাটেগরি, আর্কাইভ, ট্যাগ, ইত্যাদির মতো অনেকগুলি পেজ থেকে পোস্টগুলো প্রদর্শন করে যাদের মূল লিঙ্ক একটাই।

প্রাথমিকভাবে পেজে সম্পূর্ণ আর্টিকেল প্রদর্শন করানোর জন্য সেটিংস করা থাকে। এটি আপনার সাইটের এসইওকে প্রভাবিত করে কারণ সার্চ ইঞ্জিন এগুলোকে ডুপ্লিকেট content হিসেবে বাছাই করে নিতে পারে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেল হোম পেজে লোড করলে সাইট স্লো হয়ে যাবে, এটাও ওয়ার্ডপ্রেস এসইওর জন্য ভালো নয়।

তাছাড়া যারা আপনার আরএসএস ফিড সাবস্ক্রাইব করেছেন, তারাও মেইলে বা ফিড থেকেই সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে ফেলবেন। যার কারণে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে ভিজিটরস কমে যাবে।

এসব সমস্যা সমাধানের সহজতম উপায় হলো পেজে সম্পূর্ণ আর্টিকেল এর পরিবর্তে সারসংক্ষেপ দেখানো।

এজন্য আপনাকে Settings » Reading  এ গিয়ে summary সিলেক্ট করে দিতে হবে।

15. ওয়ার্ডপ্রেস এসইওর জন্য লোডিং স্পিড ও নিরাপত্তা

আপনি উপরের সমস্ত ওয়ার্ডপ্রেস এসইও টিপস এবং বেস্ট প্রাকটিসগুলো অনুসরণ করার পরেও, যদি আপনার সাইটটি ধীরগতির হয়ে থাকে বা কোনও হ্যাকার দ্বারা স্লো করে ফেলা হয়, তবে আপনার সার্চ ইঞ্জিন Rankএও বড় ধরণের প্রভাব পরবে।

slow performance এর কারণে ট্রাফিক লস যেন না হয়, তা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো।

16. সাইটের পেজ লোডিং স্পিড অপটিমাইজেশন

গবেষণায় দেখা যায় যে,

in the internet age, the average human attention span is shorter than that of a goldfish

Web usability বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, ব্যবহারকারীরা কোনও ওয়েবসাইট দেখার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঠিক করে ফেলেন যে তিনি থাকবেন নাকি চলে যাবেন।

তার মানে হলো যে, কোনও ওয়েবসাইটের মালিক হিসাবে কনটেন্ট উপস্থাপন এবং ভিজিটরসকে ধরে রাখার জন্য আপনার কাছে কেবল কয়েক সেকেন্ড সময় রয়েছে।

শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটটি লোড হওয়ার পিছনে এই মূল্যবান সময়টুকু নষ্ট হোক, তা নিশ্চয়ই আপনি চান না।

গুগলের মতো অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলো এখন ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ঠিক রাখতে স্লো লোডিং ওয়েবসাইটের চেয়ে দ্রুততর ওয়েবসাইটকে ভাল পজিশন দেয়।

17. ওয়ার্ডপ্রেস ইমেজ অপটিমাজেশন

চিত্রগুলো লেখার চেয়ে বেশি আকর্ষক তবে, এগুলো পেজ স্লো লোড হওয়ার কারণও বটে। আপনি যদি চিত্রের আকার এবং গুণমান সম্পর্কে সতর্ক না হন তবে তারা আপনার ওয়েবসাইটকে স্লো করে ফেলতে পারে।

আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি সাইট দ্রুত লোড করার জন্য অপটিমাইজড করা ছবি ব্যবহার করেছেন। ছবি অপটিমাইজড কিভাবে করতে হয় জানতে গাইডটি দেখে নিন।

সার্চ ইঞ্জিনগুলোর জন্য ইমেজ অপটিমাইজেশন করতে আরেকটি কৌশলটি হলো টাইটেল এবং Alt ট্যাগ ব্যবহার করা। এই ট্যাগগুলি সার্চ ইঞ্জিনকে বুঝতে সাহায্য করে যে আপনার চিত্রটি কি সম্পর্কিত।

কোনও চিত্র আপলোড করার সময় ওয়ার্ডপ্রেসে সহজেই টাইটেল এবং Alt ট্যাগ যুক্ত করা যায়।

যদি আপনি একজন ফটোগ্রাফার হন কিংবা, আপনার অনেক ছবি যোগ করার প্রয়োজন হয়, তবে আপনার একটি গ্যালারি প্লাগইন ব্যবহার করা উচিৎ, যেমন: Envira Gallery

18. Cache Plugin ব্যবহার

ওয়ার্ডপ্রেস একটি গতিশীল কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। যখনই কোনও ব্যবহারকারী আপনার ওয়েবসাইটটিতে আসেন, ওয়ার্ডপ্রেস ডাটাবেস থেকে তথ্য নিয়ে আসে এবং তারপরে ওয়েবপেজটি ব্যবহারকারীর ব্রাউজারে উপস্থাপন করে, কিন্তু এর আগে আরও কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। যখন প্রচুর ব্যবহারকারী একই সময়ে সাইটে আসেন তখন ওয়েবসাইট লোডিং স্পীড আরো স্লো হয়ে যায়।

ওয়ার্ডপ্রেস caching

কিন্তু cache plugin ওয়ার্ডপ্রেস সাইটকে অনেকগুলো স্টেপ এড়ানোর সুযোগ করে দেয়। যার কারণে সাইটের লোডিং স্পিড অনেক ভালো থাকে। যা আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের এসইও উন্নতিতে খুবই গুরত্বপূর্ণ।

19. SSL/HTTPS ব্যবহার

SSL (Secure Sockets Layer) এমন একটি প্রযুক্তি যা কোনও ব্যবহারকারীর ব্রাউজার এবং ওয়েবসাইট হোস্টিং সার্ভারের সাথে সুরক্ষিত সংযোগ স্থাপন করে ডাটা ট্রান্সফার করতে দেয়। এটি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইট এবং ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্যের অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয়।

এসএসএল দ্বারা সুরক্ষিত ওয়েবসাইটগুলি ব্রাউজারের ঠিকানা বারে একটি প্যাডলক সাইন (তালা চিহ্ন) দ্বারা নির্দেশিত থাকে এবং সাইটের ডোমেইনের সাথে https যুক্ত করে দেয়।

ভালোমানের সকল ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানী বিনামূল্যে এসএসএল সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। তাই হোস্টিং সার্ভার বাছাই করার আগে প্রয়োজনীয় বিষয় দেখে নিন।

ওয়ার্ডপ্রেস এসইও নিয়ে শেষ কথা

আপনি একবার ওয়ার্ডপ্রেস এসইও বেস্ট প্রাকটিসগুলো বুঝে গেলে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে চাইবেন, এজন্য বিভিন্ন এসইও কোর্স করতে পারেন।

আমরা আশা করি যে এই আর্টিকেলটি আপনাকে SEO এর জন্য আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটকে কীভাবে অপটিমাইজ করতে হবে তা শিখতে সহায়তা করেছে।

এই ওয়ার্ডপ্রেস এসইও টিপসগুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ করুন। ‍এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সাইটের অবস্থান ও ট্রাফিক সংখ্যার পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন ইনশা’আল্লাহ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top