ফ্রিল্যান্সিং কি, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?

ফ্রিল্যান্সিং কি

বর্তমানে আমাদের যুবক সমাজের মাঝে বার্নিং কোয়েশ্চেনগুলোর একটি ফ্রিল্যান্সিং কি, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো, কোন কাজ জানলে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়, সত্যি বলতে Freelancing শুরু করতে চায় এমন যুবক-যুবতীর মনে অনেক প্রশ্নই জমে আছে।

এক কথায় “নিজের কোনো একটি কাজ অন্যকে দিয়ে করানো এবং বিনিময়ে অর্থ প্রদান অথবা অন্যের কোনো কাজ করে দেওয়ার বিনিময়ে কিছু অর্থ উপার্জনকেই সাবলীল ভাষায় ফ্রিল্যান্সিং ( freelancing ) বলে”।

ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে এই প্রশ্নের উত্তরে আসলে বলতে  ব্যপক অর্থ ফ্রিল্যান্সিং এর কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, তবে ফ্রিল্যান্সিকে একটু বুঝিয়ে বলা যায়। ধরুন, আপনাকে বলা হলো একটা আম বাগান থেকে ১০০টা ভালো ও সুন্দর আম সংগ্রহ করতে এবং সময় বেঁধে দেওয়া হইলো ৩০ মিনিট।

এই অল্প সময়ে দ্রুত আম গাছ থেকে আম সংগ্রহ করা দুস্কর তবে, এই কাজটির জন্য আপনাকে ভালো একটা এমাউন্ট পেমেন্ট করা হবে। তো আপনার কাছে শর্ত গুলো হলো :

  • ভালো আম
  • ১০০ টি আম
  • সময় ৩০ মিনিট

এই ৩টা শর্ত আপনার একার পক্ষে মেনে কাজ করা কঠিন। তো আপনি যদি এই অল্প সময়েই সবগুলো শর্ত মেনে কাজগুলো করতে চান তবে এর জন্য আপনার প্রয়োজন বেশী সংখ্যক মানুষ। কারণ শর্তে কোথাও লেখা নেই আপনাকে একাই আম তুলতে হবে।

তো আপনি ১০ জন লোক নিয়োগ করলেন এই কাজটির জন্য এবং বিনিময়ে তাদের জন্য কিছু অর্থও বরাদ্দ করলেন। দেখা গেলো ঠিক সবগুলো শর্ত আপনি ঠিকঠাক পূরণ করতে পেরেছেন। এখন আপনার জন্য যে ১০ জন লোক কাজ করলেন, তারা কিন্তু আপনার সাথে চুক্তিবদ্ধ কিংবা দায়বদ্ধ ছিল না, তারা মূলত নির্দিষ্ট এই কাজের জন্য কিছু টাকার বিনিময়ে কাজটি করেছে, সুতরাং এই কাজটি তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং।

ফ্রিল্যান্সিং কি | What is Freelancing in Bangla?

ফ্রিল্যান্সিং কি (what is Freelancing)?

১৮১৯খ্রিস্টাব্দে “Walter Scott” নামক এক লেখকের বইতে প্রথমবার Freelancer শব্দটি ব্যবহৃত হয়। ধারণা করা হয় মধ্যযুগে একধরনের ভাড়াটে যোদ্ধা ছিল যারা অর্থের বিনিময়ে রাজা-বাদশাহদের জন্য যুদ্ধ করতো, এই যোদ্ধাদের থেকেই ফ্রিল্যান্সার শব্দের উৎপত্তি।

অর্থাৎ, কোন কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে মুক্তভাবে কোন কাজ করাকে ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) বলা হয় এবং যারা এধরনের মুক্ত পেশায় যুক্ত তাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার (Freelancer)।

সহজভাবে বললে, ফ্রিল্যান্সিং মানে অন্য কারো দ্বারা নিযুক্ত না হয়ে একটি স্বাধীন কোম্পানি হিসাবে কাজ করা। ফ্রিল্যান্স, ফ্রিল্যান্সার, বা ফ্রিল্যান্স কর্মী, সাধারণত এমন একজন ব্যক্তির জন্য ব্যবহৃত শব্দ যা স্ব-নিযুক্ত এবং কোনো নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার কাছে দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়।

একজন দক্ষ ব্যক্তি বর্তমানে চাইলেই ঘরে বসে তার দক্ষতার উপর কাজ করতে পারে, এজন্য কোন নির্দিষ্ট কোম্পানীর সাথে চুক্তি বা মাসিক বেতনের জন্য ৯ টা – ৫ টা অফিস করতে হয় না।

একজন ফ্রিল্যান্সার কোন কাজের অর্ডার নিয়ে সময়মতো ডেলিভারী দেন। এখন তিনি টানা ২৪ ঘন্টা কাজ করবেন, রাতে কাজ করবেন নাকি অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নিবেন, সেটা তার ব্যপার।

মূল কথা হলো, ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সফল হতে হলে সময়মতো এবং সুন্দরভাবে কাজ ডেলিভারি দিতে হবে। তবে, নির্দিষ্ট কোন বস থাকবে না, আপনি চাইলে কারো কাজ নিবেন, না চাইলে নিবেন না।

আরো পড়ুন:  মেয়েদের জন্য অনলাইন জব | 10 Easy Job for Girls in BD

তবে, সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো এবিষয়ে হার্ড স্কিলের পাশাপাশি বেশ কিছু সফট স্কিল সম্পর্কে জেনে নেওয়া দরকার, তা না হলে লাখ লাখ ফ্রিল্যান্সারদের মতো আপনিও ব্যর্থ হতে পারেন। চলুন তবে ফ্রিল্যান্সিং কি, এবং ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো সেবিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।

ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য কী?

আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং একে অপরের সাথে কানেক্টেড, কিন্তু এক নয়। Freelancing এবং Outsourcing এর মাঝে বিশাল পার্থক্য বিদ্যমান।

Outsourcing শব্দটি Out এবং Source শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ বাইরের কোনো সোর্স। বর্তমান মার্কেটের ভাষায় বললে স্থায়ী কর্মীদের বাইরের কোনো জায়গা বা ফ্রিল্যান্সার থেকে কাজ করে নেওয়াই হলো আউটসোর্সিং।

অর্থাৎ, ফ্রিল্যান্সিং যেমন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ব্যবহৃত শব্দ, তেমনি ফ্রিল্যান্স কাজ প্রদানকারীদের জন্য আউটসোর্সিং শব্দ।

ধরুন, আপনি ওয়েব ডেভেলপমেন্টে পারদর্শী একজন ফ্রিল্যান্সার। প্রতিবর্তন একটি নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য নিজের ওয়েব ডেভেলপারদের বাইরে আপনাকে কাজটি করতে দিলো (আউটসোর্স কন্ট্রাক্টর)।

তাহলে এখানে আপনি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করছেন। অন্যদিকে, প্রতিবর্তন আউটসোর্সিং করছে। অর্থাৎ, টিমের বাইরে গিয়ে নতুন কোনো কর্মী না নিয়ে শুধুমাত্র এই কাজটির জন্য আপনার সাথে চুক্তি করছে। আপনি প্রতিবর্তনের জন্য আউট সোর্স।

পূর্ববর্তী উদাহরণের সাথে রিলেট করার চেষ্টা করুন, সেখানে আপনি ১০ জন ফ্রিল্যান্সার হায়ার করেছিলেন, তাদের জন্য সেটা ছিল ফ্রিল্যান্সিং, আর আপনার জন্য আউটসোর্সিং।

আউটসোর্সিং করায় আপনাকে পেমেন্ট দিতে হবে, অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং করায় আপনি পেমেন্ট পাবেন।

আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং কাজ দেওয়া নেওয়ার জন্য সাধারনত আমরা একই ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কাজ ও ফ্রিল্যান্সার খুঁজি। অর্থাৎ আউটসোর্সিং সাইট এবং ফ্রিল্যান্সিং সাইট এর মাঝে পার্থক্য নেই।

তাহলে বুঝলেন তো, আউটসোর্সিং কি? আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং এর মাঝে কি পার্থক্য! এখন নিশ্চয়ই আপনি কাজ দেওয়ার জন্য এই আর্টিকেলটি পড়তে আসেননি। সুতরাং, আমাদের আর্টিকেলটি মূলত ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন, নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন সেবিষয়ে, Outsourcing নিয়ে নয়।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো ?

ফ্রিল্যান্সিং শব্দটা ছোট হলেও বর্তমান এই ছোট শব্দটিই বহু তরুণ – তরুণীর ঘুরে দাঁড়ানোর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লাস সিক্সে থাকতে পড়েছিলাম “আত্মকর্মসংস্থান” নিয়ে। অর্থাৎ নিজেই কাজের সৃষ্টি করা।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে মূলত নিজেই নিজের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার এক চমৎকার মাধ্যম। আপনি কোনো ব্যাপারে অভিজ্ঞ থাকলে নিজের অভিজ্ঞতা বা পছন্দকে পেশাতে রূপ দিয়ে ফেলুন।

কাজটা যাই হোক না কেনো, শুধু একটু চেষ্টা আর ধৈর্য্যই পারে আপানাকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে উন্নতির চরম শিখড়ে পৌছে যেতে।

ফ্রিল্যান্সিং করতে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যেই তিনটি জিনিস প্রয়োজন তা হলো একজন ফ্রিল্যান্সারের

  • সময়,
  • ধৈর্য্য এবং
  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে দক্ষতা।

ফ্রিল্যান্সার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে এইদিকে বেশী সময় দিতে হবে। ধৈর্য্য ছেড়ে দিবেন তো হেরে যাবেন। এছাড়াও, আপনাকে বেশ কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।

যদি আপনি ভিডিও এডিটিং বা মাইক্রোসফট এক্সেল বা যে কোনো কাজ হোক তা টাইপিং, সাউন্ড মিক্সিং, ডিজাইনিং যাই হোক না কেনো তা আপনাকে মোটামুটি আয়ত্বে রাখতে হবে বা ঐ বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। কম্পিউটারসহ অন্যান্য টুলস তো আপনাকে সাথে রাখতেই হবে। তো আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন ভাবছেন, তখন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে আপনার নিচে উল্লেখ করা কাজগুলো করতে হবে।

১। ফ্রিল্যান্সিং সাইট ঘুরে দেখুন

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো, এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার প্রথম ধাপ কাজ ঠিক করা। আর এজন্য যেখানে কাজ পাওয়া যায় সেখানে গিয়ে কাজগুলো সম্পর্কে ধারণা নেওয়া।

আরো পড়ুন:  কন্টেন্ট রাইটিং কি? কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করার উপায়

ফ্রিল্যান্সিং জব গ্লোবাল ভিলেজ থিউরিকে বাস্তব করে তুলেছে। সারা পৃথিবীর ক্রেতা-বিক্রেতাকে এক জায়গায় নিয়ে এসেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাকে এক করে দিতে অনেক মধ্যস্ততাকারী সাইট রয়েছে। তবে আউটসোর্স কন্ট্রাক্টর ও ফ্রিল্যান্সারদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সাইটগুলো হলো-

ফ্রিল্যান্সিং সাইট Fiverr এ তুলনামূলক দ্রুত কাজ কাজ পাওয়া যায়। ৫-১০ ডলারের ছোট ছোট কাজ পাওয়ার জন্য ফাইবার এবং মাইক্রোওয়ার্কার এ কাজ শুরু করতে পারেন।

এই সাইটের জন্য আপনার ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর মতো কঠিন কাজ না জানলেও আয় করার সুযোগ রয়েছে। একটি ইংরেজি আর্টিকেল লিখেও ১০ থেকে ৩০০ ডলার বা তারও বেশি আয় করা সম্ভব।

২। ফ্রিল্যান্সিং কাজ বাছাই করুন

ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে আপনি একটি ফেসবুক কভার পেজ কিংবা কোন ইভেন্ট ব্যানার পেজ বানিয়েও আয় করতে পারবেন। ছোট ছোট কাজ যেগুলো আপনি শখের জন্য করে থাকেন, এমন কাজ করেও ফাইভার থেকে আয় করা সম্ভব।

এমনকি ছবি ইডিট করে, কিংবা ছবি বিক্রি করে আয় করতে পারেন। এছাড়া দেখে দেখে লিখে অর্থাৎ রি-রাইট করেও আয় করা যায় (অনেকের পিডিএফ ফাইলকে ওয়ার্ড  এ নেওয়ার দরকার হয়)। এমন হাজারো সহজ কাজ আপনার জন্য অপেক্ষা করছে ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে।

ফ্রিল্যান্সিং সাইটে যেসব কাজ করা যায়:

  1. Graphics & Design
  2. Web Developement
  3. Digital Marketing
  4. Content Writing & Translation
  5. Video & Animation
  6. Music & Audio
  7. Programming & Tech
  8. Business
  9. Lifestyle
  10. Industries, etc

প্রত্যেকটি ক্যাটাগরিতে আবার ১০০+ সাব-ক্যাটাগরি রয়েছে। আপনার দক্ষতা রয়েছে, এমন কাজ অবশ্যই আপনি ফাইভারে পেয়ে যাবেন। যেহেতু, বর্তমানে অনেক ফ্রিল্যান্সিং সাইট রয়েছে, সুতরাং কাজের পরিধিও বাড়ছে।

তাই, বেশ কিছু ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট ঘুরে দেখুন, আপনার চাহিদা ও পছন্দমতো কোন কাজের ক্যাটেগরি আছে কি না, সেসব কাজের অর্ডার হচ্ছে কি না।

কাজ বাছাই করার সময় অবশ্যই খেয়াল করবেন, তা যেন হিউম্যান স্কিল বেজড হয়। বড্ড সহজ কাজের বাজার চাহিদা বেশিদিন থাকেনা। তাছাড়া, যেসব কাজের চাহিদা কম, সেগুলোকেও স্কিপ করার চেষ্টা করুন, নইলে পরে কাজের জন্য বসে থাকতে হতে পারে।

৩। ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখা শুরু করুন

ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আপনি কোন কাজ করবেন, তা বাছাই করে নেওয়ার পর আপনাকে সেবিষয়ে পূর্ণ দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ঘরে বসে কাজ করা যায় বলে শুধুমাত্র দেশে নয়, আপনার প্রতিযোগিতা হবে বিশ্বব্যাপী। সারা পৃথিবীর ফ্রিল্যান্সাররা আপনার মতোই কাজ পেতে চায়, তাই আপনি যে কাজ পেতে চাইবেন, সেটার জন্য অনেকেই বিড করবে। এমন পরিস্থিতে কাজ পেতে হলে দক্ষতায় কমতি রাখার সুযোগ জিরো পার্সেন্ট।তাই, দক্ষতা অর্জনে কোন ছাড় না দিয়ে নিজের শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করুন।

ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখার জন্য আপনি অফলাইন এবং অনলাইন, দুটো প্লাটফর্মই বেছে নিতে পারেন। বর্তমানে অনলাইন কোর্স করার অনেক সাইট রয়েছে, যেখানে ফ্রি এবং পেইড কোর্স করে কাজ শেখা যায়। যদি ইংরেজি ভাষা আপনার জন্য সমস্যা হয় তবে, বাংলা অনলাইন কোর্স করার সাইটগুলোও আপনার জন্য সহায়ক হতে পারে।

বর্তমানে, ইউনিয়ন পরিষদে এবং উপজেলা পর্যায়ে সরকারিভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজের উপর কোর্স করানো হচ্ছে। এছাড়া, আপনার নিকটস্থ অনেক ভালো কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোর্স করায় এমন কোচিং থেকেও কাজ শিখতে পারবেন।

তবে, আমার মতে, ফ্রিল্যান্সিং কাজ কোথায় থেকে শিখবেন, তা ঠিক করার আগে একটু যাচাই করে নেওয়া উচিৎ। তা না হলে, পরবর্তীতে দেখবেন আপনি মার্কেটে প্রবেশ করার পর যে কাজ নিয়েছেন, তা সঠিকভাবে করতে পারছেন না, শেখায় ঘাটতি থেকে গেছে।

৪। ইন্টার্ন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করুন

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে করার মতো কোন কাজ শিখলেই আপনি লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন, এই আশা শুরুতেই রাখবেন না। কাজ জানলে টাকা আসবেই ইন-শা-আল্লাহ। ফ্রিল্যান্সিং সাইটে নিজে কাজ নেওয়ার আগে আপনি কোন প্রতিষ্ঠানের আন্ডারে কাজ করুন।

আরো পড়ুন:  সেরা অনলাইন ইনকাম সাইট এর তালিকা | Best 15 Online income Site

যেমন, যেসব প্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখানো হয়, সেখানে কাজ শেখার পর ৩-৬ মাস তাদের ক্লায়েন্টদের কাজ করার জন্য দেওয়া হয়। অথবা, আপনার কোন পরিচিত ফ্রিল্যান্সারের কাজও করে দিতে পারেন।

আপনাকে এজন্য কোন সম্মানী দেওয়া হোক আর না হোক, ভবিষ্যতে আপনি এই ইন্টার্নশীপের সুফল অবশ্যই পাবেন, ইন-শা-আল্লাহ।

অনেকে ক্লায়েন্ট ডিল করতে পারেনা, কাজ করতে গিয়ে আটকে যায়, ক্লায়েন্ট ধরে রাখতে পারেনা, সর্বোপরি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার আর গড়ে তুলতে পারেননা। কিন্তু, একজন এক্সপার্ট এর আন্ডারে ইন্টার্ন করার পর আপনি এসব সমস্যায় পরবেন না আশা করা যায়।

৫। ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ফ্রিল্যান্সার একাউন্ট তৈরি করুন

আমি সাজেস্ট করি, ইন্টার্ন শুরু করার সময়ই একাউন্ট তৈরি করে সাজিয়ে ফেলুন। কেননা, শুরুতে আপনার রেটিং থাকেনা, তাই সহজে কাজ পাবেননা। আপনি এসময় থেকেই বিড করা শুরু করলে আশা করি, ইন্টার্ন শেষ হতে হতেই প্রথম কাজ পেয়ে যাবেন ইন-শা-আল্লাহ। আর কাজ শেষে রেটিং ভালো পেলে কাজ আসতেই থাকবে।

একাউন্ট করার সময় আপনার গিগটাকে সুন্দর করে সাজান, নিজের কাজের বর্ণনা ভালোভাবে দিন, প্রয়োজনে একজন ফ্রিল্যান্সার কন্টেন্ট রাইটার হায়ার করুন।

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ক্ষেত্রে একটি জিনিস প্রায়শই নতুন Freelancer যে ‍ভুল করেন, তা হলো গিগের মূল্য খুবই কম রাখা। আপনি বলুন তো, একদম সস্তায় যে পণ্য বিক্রি করছে, সেটা সম্পর্কে আপনার ধারণা কি হয়?

অবশ্যই নতুন হিসেবে রেটিংধারীদের চেয়ে কম মূল্য রাখবেন, তবে এতটা কম নয় যে, আপনার যোগ্যতা নিয়ে ক্লায়েন্ট এর মনে প্রশ্ন জাগে।

৬। বিড করুন

গিগ পাবলিশ করার পর থেকেই কাজের জন্য বিড করা শুরু করুন। আপনার গিগের সাথে রিলেটেড কাজ প্রকাশ পেলেই বিড করবেন। তবে বিড করার সময় নিজের কাজ ও দক্ষতা সম্পর্কে যে বর্ণনা দিতে হয়, তা অবশ্যই সংক্ষিপ্ত অথচ সম্পূর্ণ বিবরণ দিতে হবে।

আপনি আপনার লেখা দিয়ে যতটা বুঝাতে পারবেন, আকর্ষণ করতে পারবেন, কাজ পাওয়ার সম্ভাবণা ততো বেশি বৃদ্ধি পাবে।

৭। ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করুন

ইংরেজি দূর্বলতা আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সারদের সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিন্তু, আন্তর্জাতিক মার্কেটে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য ইংরেজি জানার বিকল্প নেই।

আপনার কাজের বিড করা থেকে শুরু করে ইন্টারভিউ সব জায়গাতেই ইংরেজি দরকার হবে। এজন্য কাজ শেখার পর পুরোদমে ইংরেজি শেখার জন্য চেষ্টা করুন। বর্তমানে সহজে ইংরেজি শেখার জন্য অনেক অ্যাপস ও কোর্স রয়েছে, যা আপনার ইংরেজি শিখতে সহায়ক হবে

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি?

যদি আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হন তবে আপনি বেশ কিছু সুবিধা পেতে চলেছেন বা পাচ্ছেন যা অন্য সব পেশাজীবীরা পায় না।

  •  ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু এক ধরনের মুক্ত পেশা তাই আপনাকে কারো কাছে কাজের জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে না।
  •  একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি আপনার পছন্দের যে কোনো কাজকে প্রাধান্য দিতে পারেন।
  •  আপনি আপনার বাসায় বা যেকোনো জায়গায় বসেই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা কি?

সব কাজেই সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই থাকে। ফ্রিল্যান্সিং কাজও এর থেকে ভিন্ন নয়। যেহেতু আপনাকে কোনো অফিসে যেয়ে কাজ করতে হয় না তাই কিছু মানুষ ফ্রিল্যান্সিংকে ছোট করে দেখেন।

তাছাড়া আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সার ও আউটসোর্স কন্ট্রাক্টদের জন্য একটাই সমস্যা দেখা দেয় এবং সেটা হচ্ছে পেমেন্ট।

সাধারণত পেপাল, ভিসা, মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট রিসিভ করতে হয় এবং এটি তুলনামূলক একটু বেশী ঝামেলার। তবে খুব শীঘ্রই সরকার এই সমস্যা থেকে উত্তরণ করার চেষ্টা করছে।

ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে শেষ কথা

আমাদের উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানলাম ফ্রিল্যান্সিং কি, কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো এবং আরো জেনেছি ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে।

ফ্রিল্যান্সিং পেশায় যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আমাদের দেশের বহু বেকার তরুণ তরুণী আজ ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। আশা করা যায় এই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত দেশের মতোই এগিয়ে যেতে পারবে।

2 thoughts on “ফ্রিল্যান্সিং কি, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top