সফটওয়্যার কি | সফটওয়্যার কিভাবে তৈরি করে

সফটওয়্যার কি

সফটওয়্যার কিভাবে তৈরি করে জানতে চান? সফটওয়্যার ডেভেলপাররা সফটওয়্যার তৈরি করে লাখ লাখ ডলার আয় করছেন। আপনি যদি একজন ডেভেলপার হতে চান তাহলে, সফটওয়্যার কি, সফটওয়্যার কত প্রকার এবং সফটওয়্যার কিভাবে তৈরি করে সেবিষয়ে জানা দরকার।

সফটওয়্যার আসলে কি : সফটওয়্যার হলো কিছু প্রোগ্রাম ও ডেটার সমন্বয় বা সেট, যা কম্পিউটারাকে কিভাবে কাজ করতে হবে তার নির্দেশনা দেয়। অর্থ্যাৎ,  সফটওয়্যার হলো কিছু নির্দেশনা, যা কম্পিউটার কে তার কাজগুলো কখন, কিভাবে করতে হবে তা বলে দেয়।

কম্পিউটার তার সব কাজ সফটওয়্যার এর মাধ্যমেই করে। তবে, আমরা একে না তো দেখতে পারি আর না তো ধরতে বা ছুঁতে পারি। আমরা বাহির থেকে কম্পিউটার এর যে অংশ গুলো দেখতে বা ছুঁতে পারি, সেগুলো ছাড়া কম্পিউটার চালাতে যা কিছু প্রয়োজন, তা সবই সফটওয়্যার।

অর্থাৎ, সফটওয়্যার চোখে দেখা যায়না। আপনি শুধু অনুভব করতে পারবেন যে আপনার কাজগুলো সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। যার সাহায্যে কম্পিউটার তার সব কাজ করে থাকে, তাই সফটওয়্যার।

সফটওয়্যার কি | What is Software in Bengali

গল্প শুনবেন! আগামিকাল অভির প্রেজেন্টেশন। সে কম্পিউটারের powerpoint ব্যবহার করে স্লাইড তৈরি করছিলো। কিছু তথ্য এবং ছবি নেয়ার জন্য সে chrome থেকে internet access করে একটি website এ ঢুকলো। ছবি ডাউনলোড করে সেটিকে কম্পিউটার memory তে save করে নিলো।

এদিকে তার android ফোনের whatsapp গ্রুপে তার টিমমেটরাও তাকে বিভিন্ন তথ্য পাঠিয়ে সাহায্য করছে। আবার ওর ছোটো বোন ওর পাশে বসে game খেলছে।

আপনি কি জানতেন উপরে ব্যবহৃত Powerpoint, Chrome, Android, Whatsapp, Game এই প্রতিটি জিনিষই যে একেকটি সফটওয়্যার!

ধরে নিচ্ছি, সফটওয়্যার কি তা এতক্ষণে বুঝে ফেলেছেন। হার্ডওয়্যার সম্পর্কে তো নিশ্চয়ই আপনাদের ধারণা আছে। এই হার্ডওয়্যারও কিন্তু সফটওয়্যার ছাড়া একেবারেই মূল্যহীন, কোনো কাজই করতে পারেনা। জ্বালানি ছাড়া যেমন গাড়ি চলবে না, তেমনি সফটওয়্যার ছাড়া হার্ডওয়্যারও কোনো কাজ করবে না!

সফটওয়্যার কত প্রকার হতে পারে, সে বিষয়ে যাওয়ার আগে বলে নিচ্ছি, সফটওয়্যার কিন্তু শুধু কম্পিউটার এর জন্যই নয়। আপনার হাতের ফোনটি যে চালাচ্ছেন, এটিও কিন্তু একটি সফটওয়্যার, android software.

আবার যদি আপনি mac বা iPhone ব্যবহার করে থাকেন এই মুহূর্তে, সেগুলো ও কিন্তু সফটওয়্যার দিয়েই চলছে। আপনি আমার লেখাটি পড়ছেন একটি ওয়েবসাইট এ ঢুকে, সেটিও সফটওয়্যার।

আসলে সফটওয়্যার কে বাদ দিয়ে আপনি কখনোই কোনো উন্নত ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না।

সফটওয়্যার কত প্রকার ও কি কি | Types of Software

সফটওয়্যার মূলত দুই প্রকার, যথা:

  • System Software এবং
  • Application Software.

1. সিস্টেম সফটওয়্যার | System Software

প্রথমেই System Software নিয়ে আলোচনা করা যাক। আচ্ছা, system software শব্দটি দ্বারা কি বুঝি আমরা? System এর জন্য যেই software, তাইতো? ঠিক তাই।

system software এর কাজ হলো system কে পরিচালিত করা। এক্ষেত্রে আমাদের system টি হলো computer , android phone, macbook বা iPhone, যে device টি আমরা ব্যবহার করছি সেটি।

অর্থাৎ, system software কম্পিউটারের ভেতরের সব কাজ সম্পাদন করে থাকে। আমরা কিছুক্ষন আগেই জেনেছি যে সফটওয়্যার ছাড়া কোনো হার্ডওয়্যার কাজ করতে পারেনা।

হার্ডওয়্যারকে কাজ করানোর দায়িত্ব টা system software এর উপর ই। system software হার্ডওয়্যার এর সকল কাজ মনিটর ও নিয়ন্ত্রণ করে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে সিস্টেম সফটওয়্যার হার্ডওয়্যার এবং কম্পিউটার এর মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করে।

সিস্টেম সফটওয়্যার এর কাজের পরিধি অনেক বড়। তাই একে আরো তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

  • Operating System
  • Utility software এবং
  • Device Driver

ক. অপারেটিং সিস্টেম | Operating system

Operating system software এর কাজ হলো computer কে mange করা। এই যেমন ধরুন computer কোন কাজ কিভাবে করবে, কোন ডেটা কখন, কোথায় এবং কিভাবে সেভ হবে, storage কেমন হবে, কোন program চলবে, কোনটা চলবে না, প্রোগ্রাম গুলো কিভাবে কাজ করবে, printer কখন print করবে ইত্যাদি।

এর কাজ মূলত হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করার মাধ্যমে ইউজার, অর্থ্যাৎ আপনাকে বা আমাকে হার্ডওয়্যার ব্যবহার করতে সাহায্য করা।

আরো পড়ুন:  মোবাইলে বই পড়ার অ্যাপ - Best 5 Free Book Reading App

যেমন, আপনি কিবোর্ডে কিছু টাইপ করছেন, সেটি মনিটর এ দেখতে পারছেন, ভুল হলে তা ঠিক করতে পারছেন। এই কাজটি আসলে operating software করছে।

আপনি কিবোর্ড এ যা টাইপ করছেন , operating software তা input হিসেবে নিয়ে, output হিসেবে আপনাকে screen এ তা দেখতে সাহায্য করছে। আবার টাইপ করা লেখাগুলো storage এ save ও করছে operating software ই।

Operating software এর কিছু উদাহরন নিয়ে আলোচনা করা যাক। আপনি নিশ্চয়ই Microsoft এর নাম শুনে থাকবেন। Microsoft হলো একটি পৃথিবী খ্যাত সফটওয়্যার কোম্পানি।

বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সফটওয়্যার হলো Microsoft. যেমন ধরুন Microsoft windows. বর্তমানে বেশিরভাগ কম্পিউটার এ পূর্বে থেকেই ডিফল্ট Operating system হিসেবে Microsoft windows install করে দেয়া থাকে।

এই অপারেটিং সিস্টেম এর আবার version ও আছে। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন শক্তিশালী আপডেট ভার্সন তৈরি হচ্ছে, যাতে করে পুরোনো version এর সমস্যা গুলো কাটিয়ে আরও স্মুথলি কাজ করা যায়। আপনি windows এর version গুলোর সাথে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হয়ে থাকবেন।

যেমন, Microsoft windows এর পুরাতন version ছিলো windows xp. এরপর সেটির আরো উন্নত ভার্সন এলো, যে গুলোতে পূর্বে যে কাজ গুলো করতে কিছুটা কষ্ট হতো, সেগুলো অনেক সহজ হয়ে গেলো।

windows 7, windows 8 এর পরে এখন windows 10 সবচেয়ে উন্নত version. এছাড়া কম্পিউটার এর আরো একটি জনপ্রিয় operating system হলো Linux operating system.

আপনার computer এ যদি Microsoft windows default দেয়া থাকে, এবং আপনি Linux এ যেতে চান, তবে আপনাকে Linux software টি download করে install করে নিতে হবে ।

লিনাক্সে যাওয়ার আগে আমাদের লিনাক্স বনাম উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে পার্থক্যমূলক আলোচনাটি দেখে নিতে পারেন।

আরো কিছু বহুল ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম আছে। যেমন অ্যানড্রয়েড ফোনের জন্য আছে android software, macbook এর জন্য MacOS, iPhone এর operating system হলো Apple IOS.

এদের ক্ষেত্রেও কিন্তু আপনি দেখবেন কিছুদিন পর পর Software update এর notification আসছে, কখনো কখনো software auto update ও হয়ে যায়। আশা করছি operating system সম্পর্কে আপনি একটি পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন।

খ. ইউটিলিটি সফটওয়্যার | Utility Software

অপারেটিং সিস্টেম এর পর পরই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে utility software. Computer কে maintain করা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজগুলো করে থাকে এই software. অর্থ্যাৎ, এর মূল কাজ হলো কম্পিউটার এর রক্ষণাবেক্ষণ করা। এছাড়া analyze, configure এবং optimization এর কাজ ও utility software এরই ।

আপনার কম্পিউটার এ scan disc, file compressor বা anti virus নামে কিছু জিনিষ হয়তো দেখে থাকবেন। এগুলোই utility software. File Manger, Backup system ও এই সফটওয়্যার এরই অংশ।

গ. ডিভাইস ড্রাইভার | Device Driver

Device Driver মূলত হার্ডওয়্যার কে physically manage করে।

আচ্ছা, একটি গাড়িতে একজন ড্রাইভার এর কাজ কি? গাড়ি চালানো, তাইতো? গাড়িটি যতোই উচ্চ মানের হোক না কেনো, ড্রাইভার না থাকলে গাড়ি কি চলবে কোনোদিন? চলবে না।

তেমনি device driver এর কাজ device চালানো। যেমন প্রিন্টার এর কথাই ধরা যাক। প্রিন্টার কে প্রিন্ট করানোর কাজ করে প্রিন্টার এর device driver. এমনি ভাবে প্রতিটি আলাদা আলাদা ডিভাইস এর জন্য আলাদা আলাদা device driver থাকে।

চলুন এবার আপনার আর আমার জন্য যেই সফটওয়্যার, অর্থ্যাৎ আমরা যেই সফটওয়্যার গুলো সরাসরি ব্যবহার করি, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করি। সেগুলো হলো application software.

2. অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার | Application Software

অ্যাপ্লিক্যান্ট এর জন্য যে সফটওয়্যার, তাই application software. প্রশ্ন হলো Applicant কারা? Applicant হলাম আপনি, আমি, আমরা। আমরা যারা এই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করি, তারাই applicant.

শুধু সিস্টেম এর জন্যই নয়, আমাদের জন্য ও অনেক অনেক গুলো সফটওয়্যার রয়েছে। আর আমরা কিন্তু এই সফটওয়্যার গুলোই প্রতিদিন ব্যবহার করি। কয়েকটি উদাহরন এর মাধ্যমে আমরা বিষয়টা আরো ভালো ভাবে জানতে পারি।

আপনি আমার এই লেখাটি কিভাবে পড়ছেন? কোনো না কোনো browser ব্যবহার করে, তাইনা? হতে পারে chrome, safari, internet explorer অথবা Firefox.

এগুলোর প্রতিটি হলো একেকটি application software. এই software গুলোর সাহায্যে আমরা ইন্টারনেট browse বা access করতে পারি। এগুলো হলো internet browsing application software.

প্রতিদিন আমাদের অনেকেরই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখার প্রয়োজন হয়। assignment করা বা word নিয়ে কোনো কাজ করার জন্য আমরা ব্যবহার করি word processor application গুলো।

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত word processor হলো Microsoft Word. এই application এ আমরা যেকোনো শব্দ খুব সহজেই টাইপ করে লিখতে, ভুল হলে তার সমাধান করতে, save করতে, এমনকি পরে আবার কখনো প্রয়োজন হলে সেই লিখা গুলো পরিবর্তন ও করতে পারি।

আরো পড়ুন:  ডিকশনারি ছাড়া ইংরেজি পত্রিকা পড়ার সহজ কৌশল

অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার এর ব্যবহার

Microsoft PowerPoint এর কথা পূর্বেই বলেছিলাম। presentation এর স্লাইড তৈরি ও তা সুন্দর ভাবে সকলের সামনে উপস্থাপন করার জন্য এই Application সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়।

সফটওয়্যার কিভাবে তৈরি করে
সফটওয়্যার তৈরি করার পদ্ধতি

শুধু কি তাই? ছোটো বড় হিসাব, বিশেষ করে কোনো প্রতিষ্ঠানের বড় বড় হিসাব গুলো একসময় হাতে গুনে করতে হতো। যা একে তো সময় সাপেক্ষ তার উপর প্রচণ্ড কষ্টের কাজ। কাগজে লাইন টেনে টেনে ঘর করে তাতে হিসাব করা, আবার কোথাও ভুল হয়ে গেলে নতুন করে পুরো হিসাব করতে হতো।

কিন্তু Microsoft excel নামক Application software সেই কাজটিই অনেক সহজ করে দিয়েছে। আপনাকে শুধু জানতে হবে এটি ব্যবহার কিভাবে করতে হয়। এই application এ কোনো ডেটা পরিবর্তন করলে তার হিসাব ফল ও নিজে থেকেই পরিবর্তন হয়ে যাবে। তাই নতুন করে হিসাব করার ও প্রয়োজন নেই।

গেইম খেলতে কে না ভালোবাসে? প্রতিটি গেইম ই একেকটি Application Software.

Image edit, graphics design এর জন্য আমরা adobe photoshop, adobe illustrator ব্যবহার করে থাকি। Adobe এর প্রতিটি product ই একেকটি application software. যেমন, Adobe xd, Adobe after effect, indesign ইত্যাদি।

তাছাড়া, অনেকে CAD বা computer aided design ব্যবহার করেন। মূলত এই software টি প্রকৌশলী বা ডিজাইনার রা ব্যবহার করেন।

বর্তমানে প্রচুর জনপ্রিয় 3D illustration বা character গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই blender নামক Application software টির সহজেই করা হয়।

এই সবগুলো তো মাত্র অল্প কিছু উদাহরন ছিলো application Software এর। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার application ব্যবহার ও তৈরি হচ্ছে, যেটাকে আসলে আমরা app নামেই বেশি চিনি।

এক্ষেত্রে একটি কথা বলে রাখা ভালো, application software run করার জন্য বা, সহজ ভাষায় বললে, application software ব্যবহার করার জন্য ও কিন্তু system software এর ই প্রয়োজন। কারণ, app টি কিন্তু আমরা কোনো না কোনো system এই চালাবো।

তবে এই application গুলো কিন্তু আপনি সব system এ ব্যবহার করতে পারবেন না। অর্থাৎ, যেই app টি আপনি আপনার কম্পিউটারে ব্যবহার করছেন, সেটি কিন্তু android phone এ কাজ করবেন না।

আবার আপনার ফোনের কোনো সফটওয়্যার কিন্তু সরাসরি কম্পিউটার এ চলবে না। যেমন আমরা আমাদের android ফোনে কোনো app download করতে হলে ব্যবহার করি Play-store নামক Application. এটি কিন্তু আবার কম্পিউটার এ কাজ করবেনা।

কম্পিউটারে হয় আপনাকে Microsoft store এ খুঁজতে হবে অথবা browser থেকে search করে download করতে হবে। তবে, থার্ড পার্টি সফটওয়্যার এর মাধ্যমে এখন কম্পিউটারে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ইনস্টল করা সম্ভব হচ্ছে।

আশা করছি, সফটওয়্যার সম্পর্কে এখন আপনার ধারণা একেবারেই পরিস্কার হয়ে গেছে।

একটা ছোটো বিষয় বলে রাখা ভালো, Customized Software এবং Package Software নাম হয়তো কেউ শুনে থাকবেন। এই দুটি কিন্তু software এর কোনো প্রকারভেদ নয়।

একটু বুঝিয়ে বলি। আমরা সবাই যেই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করি, যেগুলো আমরা ইন্টারনেট থেকে সকলেই ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারি, সেগুলো হলো প্যাকেজ সফটওয়্যার।

আর, Customized Software সাধারণত কোনো বিশেষ প্রতিষ্ঠান এর নিজস্ব ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়।

সফটওয়্যার কিভাবে তৈরি করে | How to Develop a Software

এবার আসুন জানা যাক, আমরা যে এত এত সফটওয়্যার ব্যবহার করি, এই সফটওয়্যার একজন ডেভেলপার কিভাবে তৈরি করে থাকেন।

যারা এগুলো তৈরি করে থাকেন, তারাও আমাদের মতই সাধারণ কিছু মানুষ। তবে তাদের আর আমাদের মধ্যে পার্থক্য এটাই, যে তারা বিশেষ কিছু ভাষা জানেন। তারা জানেন যে কম্পিউটার বা কোনো সিস্টেম এর সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়।

এই মানুষগুলোকে প্রোগ্রামার এবং যারা শুধুমাত্র সফটওয়্যার তৈরি করে তাদের সফটওয়্যার ডেভেলপারও বলা হয়।

কারণ, এরা আসলে অনেক গুলো ডেটা দিয়ে একটি প্রোগ্রাম তৈরি করেন যা দিয়ে সফটওয়্যার হিসেবে কাজ করে। সহজ ভাষায়, এরা কোড (code) লেখেন। অর্থ্যাৎ, প্রতিটি সফটওয়্যার কোডিং করে তৈরি করা হয়।

সফটওয়্যার তৈরির ধাপসমূহ
সফটওয়্যার তৈরির ধাপসমূহ

প্রশ্ন হলো coding কেনো করা হয়। আমরা তো সাধারণ ইংরেজী ভাষাতেই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করি। এর কারণ হলো, আমরা যে ইংরেজী ভাষায় সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করি, সেটি আসলে কম্পিউটার এর ভাষা নয়। কম্পিউটার তার নিজের ভাষাকে আমাদের ভাষায় অনুবাদ করে আমাদের তা দেখায়।

কম্পিউটার এর ভাষা কি?

আমাদের যেমন যার যার নিজস্ব ভাষা রয়েছে, কম্পিউটারের ও নিজের ভাষা রয়েছে। এই ভাষাই হলো coding এর ভাষা বা কম্পিউটারের ভাষা। কম্পিউটার বা system শুধু code বোঝে। প্রোগ্রামার রা এই code গুলো ব্যবহার করেই কম্পিউটারের সাথে কথা বলেন।

আরো পড়ুন:  brilliant connect apk | ফ্রি কলিং সফটওয়্যার

কম্পিউটার মূলত 0 এবং 1 ছাড়া কোনো কিছুই বোঝেনা। কম্পিউটারের ভিতরের সবগুলো কাজ শুধুমাত্র 0 ও 1 দিয়েই হয়। এখন, আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন যে, প্রোগ্রামার রা কি তাহলে শুধু 0 আর 1 লিখেই কোড করেন?

এর উত্তর হলো, না। কম্পিউটারের এই শুধুমাত্র 0 এবং 1 দিয়ে কোড লিখতে গেলে একটি মাত্র সফটওয়্যার তৈরি করতেই এক শতাব্দী পার হয়ে যেতো।

তাই সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন computer language তৈরী করা হয়েছে। যা আমাদের জন্য বুঝতেও কিছুটা সহজ হয়, আর কম্পিউটার ও এই ভাষাকে নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারে।

এমনই কয়েকটি computer language এর উদাহরন হয়তো আপনারাও শুনে থাকবেন। html, java, C++, C#, objective C, PHP, Javascript, jquery, SQL, dot NET, Python ইত্যাদি।

এই ভাষা গুলো ব্যবহার করেই সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। আর software তৈরির যে প্রক্রিয়া, সেটিকে বলা হয় Computer Programing বা software development.

এখন, আপনি যদি চান নিজেই কোনো software develop করতে বা কোনো সফটওয়্যার তৈরি করতে, আপনিও কিন্তু সেটি করতে পারবেন।

যদি ভেবে থাকেন যে, আমিতো এই বিষয়ে পড়ালেখা করিনি কিংবা আমার Educational background তো কম্পিউটার বিষয়ক নয়, তাহলে আমি কি করে সফটওয়্যার তৈরি করবো?

তবে আপনার জন্য বলছি, উপরে উল্লিখিত computer language গুলো যদি আপনি শিখে নেন, তবে আপনার পক্ষেও সম্ভব অসাধারণ একটি সফটওয়্যার তৈরি করা।

সফটওয়্যার তৈরি করার পদ্ধতি | Software Developing Process

১. সমস্যা খুঁজে বের করা: এখন তো প্রচুর মানুষ সফটওয়্যার তৈরি করার দিকে ঝুঁকছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তবে, আপনিও যদি সফটওয়্যার তৈরি করতে চান, সেক্ষেত্রে কতগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

আচ্ছা, বলতে পারবেন সফটওয়্যার কেনো তৈরি করা হয় বা হয়েছে? আপনার মাথায় হয়তো অনেক কিছুই আসছে, তবে প্রধান কারণটি হলো সমস্যা সমাধানের জন্য।

যদি কখনোই কোনো সমস্যায় আমরা না পড়তাম, তাহলে কোনোদিন সফটওয়্যার তৈরিই হতো না। যেমন, লেখার সমস্যা না থাকলে আমাদের কখনো word processor এর প্রয়োজন হতো না।

হিসেবের সমস্যা না থাকলে কোনোদিন excel বা spreadsheet software গুলো তৈরি করার প্রয়োজন হতো না। বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই যে, প্রতিবার আমরা একটি সমস্যায় পড়ছি, আর সেটির সমাধান হিসেবেই software তৈরি হয়েছে।

তাই আপনি যদি সফটওয়্যার তৈরি করতে চান, আপনাকে আগে সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে। এমন সমস্যা, যেটির যথাযথ সমাধান এখনো বের হয়নি। হতে পারে ওই কাজের জন্য কোনো software রয়েছে।

আপনাকে এমন একটি সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে, যা আগের software গুলো থেকে উন্নত এবং সমস্যা সমাধান বেশি সহজ।

এভাবেই মূলত জনপ্রিয় software গুলোর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের তৈরি software এর ব্যবহার বৃদ্ধি করেছে। যেই software কোনো সমস্যা যতো সহজে সমাধান করতে পারে, তার প্রয়োজনীয়তা ও দিন দিন তত বাড়তে  থাকে।

কতগুলো ধাপ মেনে একটি software তৈরি করা হয়। সবার প্রথমেই সমস্যা খুঁজে বের করে তা বিশ্লেষণ বা analysis করা হয়। সমস্যা টা আসলে কাদের হচ্ছে, কি ধরণের সমাধান প্রয়োজন, কেমন টেকনোলজি প্রয়োজন, ইত্যাদি।

২. সমাধান খুঁজতে হবে: এরপর সেই সমস্যা সমাধানের জন্য কি কি প্রয়োজন তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে একটি আইডিয়া দাঁড় করাতে হয়।

৩. কোডিং করা: এবার, coding এর মাধ্যমে চিহ্নিত সমস্যা সমাধানের idea কে implement করে সফটওয়্যার তৈরি করা হবে।

৪. পরীক্ষা করা: সফটওয়্যার তৈরি করার পর সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, তা পরীক্ষা করতে হয়।

৫. বাগ ফিক্স করা: কোনো কারিগরী ত্রুটি বা ভুল ধরা পড়লে তা ঠিক করে আবারো টেস্ট করা হয়।

৬. উম্মুক্ত করা: এরপর সফটওয়্যারটি সকল গ্রাহককে ব্যবহারের সুযোগ দিতে market বা অনলাইন এ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

৭. সফটওয়্যার আপডেট করা: সফটওয়্যার তৈরি করে অনলাইনে ছেড়ে দিলেই কিন্তু কাজ শেষ হয় না। সফটওয়্যারটিকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ব্যবহারকারীর রিভিউ নিয়ে প্রতিনিয়ত আপডেট করতে হবে।

আপনার ব্যবহার কৃত app গুলো কিছুদিন পর পর যখন update দিতে যান, তখন what’s new অপশন এ bug fixing বলে একটা লেখা থাকে। এর মাধ্যমে আসলে আগের ত্রুটি গুলো সংশোধন করা হয়েছে বুঝানো হয়। এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।

প্রতিবারই একেকটি আপডেট এর পর আবারো সফটওয়্যার টি check করা হয়, আর নতুন নতুন সমাধান বের করা হয়। এভাবেই মূলত সফটওয়্যার তৈরি করে অনলাইন থেকে ইনকামের পথ তৈরি হয়।

সফটওয়্যার নিয়ে শেষ কথা

পুরো লেখাটি পড়ে এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনার সফটওয়্যার কি, সফটওয়্যার কত প্রকার সেসম্পর্কে জেনেছি। এখন আপনি যদি সফটওয়্যার তৈরি করে আয় করতে চান তাহলে আলোচনায় উল্লেখিত সফটওয়্যার কিভাবে তৈরি করে সেই বিষয়ে জানার পর প্রোগ্রামিং এবং কোডিং শেখা শুরু করুন।

আশা করি, সফটওয়্যার তৈরি করার পদ্ধতি সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা হয়ে গেছে। সফটওয়্যার কি কিংবা সফটওয়্যার নিয়ে অন্য কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

4 thoughts on “সফটওয়্যার কি | সফটওয়্যার কিভাবে তৈরি করে”

    1. সফটওয়্যার তৈরি করার উপায় নিয়ে লেখা অংশটুকু আরেকবার পড়বেন প্লিজ!

  1. C programme এর মাধ্যমে software তৈরি করার পর কিভাবে ব্যবহার করতে হবে এবং আপলোড করার নিয়ম দয়া করে আমার email এ জানিয়ে দিবেন

    1. Fatema Binte Faruk

      সফটওয়্যার তৈরির পর সাকসেসফুল টেস্ট রান দিয়ে ডিজাইন ঠিক করে নিয়ে প্লেস্টোর, আইস্টোর বা অন্য যে প্লাটফর্মের জন্য তৈরি করেছেন, সেখানে নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে আপলোড দিতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top